DIPLOMA IN AUTOMOBILE ENGINEERING

সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ

অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, প্রযুক্তিগত অগ্রগতির শীর্ষে থাকা একটি গতিশীল এবং পরিবর্তনশীল ক্ষেত্র, যা আধুনিক বিশ্বের পরিবহন ব্যবস্থা গঠনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররা মূলত স্বয়ংক্রিয় যানবাহনের সহজ ভাষায় (গাড়ি, মোটরসাইকেল, বাস বা ট্রাক) ডিজাইন ও উৎপাদন থেকে শুরু করে এর কর্মদক্ষতা এবং নিরাপত্তাকে জোরদার করে পাশাপাশি উদ্ভাবনী এবং টেকসই পরিবহন ব্যবস্থা গড়ার পেছনের চালিকাশক্তি।
অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং হল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি শাখা যা মেকানিক্যাল, ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক্স এবং কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারং ক্ষেত্রসমূহের সংমিশ্রণ।

পড়াশোনার মূল ক্ষেত্রঃ

ক) পাওয়ারট্রেন সিস্টেমঃ এই সিস্টেমটি গাড়ির ইঞ্জিনে উৎপাদিত শক্তিকে চাকা পর্যন্ত পাঠানোতে ব্যবহৃত সকল যন্ত্রাংশ নিয়ে গঠিত। যেহেতু ইঞ্জিনই গাড়ির প্রাণ তাই অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ এই সিস্টেমটিতে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করা হয়।

খ) গতিশীলতাঃ মোটরস্পোর্টস বা রেসিং, অটোমোবাইলে শিল্পের একটি বড় অংশ। যার কারণে যেকোনো গাড়ির গতিশীলতা বিষয়টি নিয়ে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এ উল্লেখযোগ্যভাবে গুরুত্ব দিয়ে থাকে।

গ) সেফটি ইঞ্জিনিয়ারিংঃ দুর্ঘটনা পরিবহন জগতের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা। দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনা এবং সড়কে নিরাপত্তার সাথে গাড়ি চালনার জন্য বিভিন্ন অত্যাধুনিক ব্যবস্থা সম্পর্কে জোর দেয়া হয়ে থাকে।

ঘ) ইমিশন কন্ট্রোলঃ বৈশ্বিক উষ্ণতা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। অটোমোবাইল শিল্পকে সম্পূর্ণ কার্বণহীন করার লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তি Electric Vehicle (EV) এবং হাইব্রিড গাড়ির দিকে গুরুতারোপ করা হয়।

ঙ) গাড়ির ডিজাইনঃ আকর্ষণীয় এবং এরোডায়নামিক দক্ষতাসম্পন্ন গাড়ির ডিজাইনে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়াররা কাজ করে থাকে যা সার্বিকভাবে গাড়ির দক্ষতা বৃদ্ধি করে।

অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কাজের ক্ষেত্রঃ

দেশ এবং দেশের বাহিরে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা এখন তুঙ্গে। দেশের ভেতরে বিভিন্ন গাড়ি সংযোজনকারী প্রতিষ্ঠান, গাড়ি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান, গাড়ি বিক্রয়োত্তর সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন বিপননকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের ট্রান্সপোর্ট বিভাগে কাজ করার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। বেসরকারি চাকরির পাশাপাশি অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সরকারি চাকরির সুযোগ রয়েছে BRTA, BRTC, RHD এবং সরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের গঠনতন্ত্র অনুসারে তাদের গাড়ি মেরামত ও ট্রান্সপোর্ট বিভাগে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারদের রয়েছে ১০ গ্রেড (২য় শ্রেণীর) সরকারি চাকরির সুবর্ণ সুযোগ। এর বাইরেও যেসকল শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে ইচ্ছুক তারা খুব সহজেই খুব অল্প মূলধন নিয়ে গাড়ি মেরামতের গ্যারেজ স্থাপন করে স্বাবলম্বী হতে পারে।

উল্লেখযোগ্য শিল্পক্ষেত্র এবং প্রতিষ্ঠানসমূহঃ

  • নাভানা অটোমোবাইলস (Toyota)
  • এক্সিকিউটিভ মোটরস লি: (BMW)
  • কন্টিনেন্টাল মোটরস (Mercedes, Land Rover)
  • এইস অটোজ (Haval)
  • র‍্যাংগস গ্রুপ (Mitshubishi, Mahindra, Suzuki)
  • ইফাদ অটোজ (Ashok Leyland)
  • রানার অটোমোবাইলস (KTM, Eicher)

ভর্তির যোগ্যতা:
ন্যূনতম এসএসসি/সমমান পাস।
সাধারণ গণিতে ন্যূনতম জিপিএ ২.০০ এবং ৪০% নম্বর
বয়স এবং এসএসসি পাসের বছরের জন্য কোন সীমাবদ্ধতা নেই।

উচ্চশিক্ষার সুযোগঃ

দেশের ভেতর প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি তে রয়েছে B.Sc in Automobile Engineering করার সুযোগ। দেশের বাইরেও রয়েছে অটোমোবাইলে উচ্চশিক্ষার সুবর্ণ সুযোগ।

পাঠ্যক্রমঃ

বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের (বিটিইবি) ডিপ্লোমা ইন অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পাঠ্যক্রম তাত্ত্বিক এবং ব্যবহারিক উভয় উপাদান নিয়ে গঠিত। প্রোগ্রামটির লক্ষ্য হল শিক্ষার্থীদের অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্ষেত্রে জ্ঞান এবং দক্ষতা প্রদান করা যাতে তারা বিভিন্ন শিল্প, সরকারী সংস্থা এবং নির্মাণ কোম্পানিতে কাজ করতে পারে। প্রোগ্রামের সময়কাল চার বছর, এবং এটি আটটি সেমিস্টারে বিভক্ত।